১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার



গাছে-গাছে লিচু ঝোলে, চাষির চোখে স্বপ্ন দোলে

মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ৩১ মে, ২০২৩, ০৭:৩৫ এএম
গাছে-গাছে লিচু ঝোলে, চাষির চোখে স্বপ্ন দোলে


দিনে দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লিচুর কদর বাড়ছে সারাদেশে। কৃষিবিদরা বলছেন, জেলার সীমান্তবর্তী  ৩ উপজেলার মাটি লিচু উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে আবাদ। তবে এবার প্রচণ্ড গরমে লিচু ফেটে গেছে। এছাড়া, আকারে অনেকটাই ছোট হওয়ায় চাষিরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।   

সরেজমিনে বাগানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, লিচুর গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে বোম্বাই, পাটনা ও চায়নাসহ বাহারি জাতের লিচু। কিছু কিছু গাছে ঝুলে থাকা লাল রাঙা লিচু বাতাসের দোল খাচ্ছে। আবার কিছু গাছে লাল সবুজের আধাপাঁকা লিচু ঝুলে আছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভিড় করছে এসব বাগান দেখতে। অনেকে আবার বাগান থেকে লিচু খেয়ে স্বাদ উপভোগ করে পরিবারের জন্য লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে ৫৭০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, পাটনা ও চায়না জাতের লিচুর আবাদ করা হয়েছে। জেলার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর,কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে সহস্রাধিক লিচু বাগান রয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর ও পাহারপুর ইউনিয়নে বাগানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।


লিচু বাগান দেখতে আসা মুক্তা আক্তার বলেন, ‘স্বামীকে নিয়ে লিচু বাগানে ঘুরতে এসেছি। বাগানে এসে গাছে দোল খেতে থাকা লিচু দেখে মুগ্ধ। মালিকের অনুমতি নিয়ে দুই-একটা লিচু খেয়েছি। লিচুগুলো খুবই রসালো। খেতে সুমিষ্ট হওয়াই পরিবারের জন্য পাঁচশ লিচু কিনেছি।’

বাগান মালিক রমজান মিয়া বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলানায় এবার ফলন ভালো   হয়েছে। এখন চলছে লিচুর বেচাকেনা। বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকরারা আসছেন বাগানে। দামদর করে বাগান থেকেই লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে কিছু লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে।’

ধন মিয়া নামে আরেক বাগান মালিক বলেন, ‘আমার বাগানে  টি গাছ রয়েছে। ফলন আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যা শুরু করেছি। তবে এবার অতিরিক্ত গরমের কারণে দিনে কয়েক বার গাছে পানি দিতে হয়েছে। ফলন ভালো হলেও আকারে কিছুটা ছোট হয়েছে। প্রতিদিনই লিচু বিক্রি করছি।’


বাগান মালিক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘বোম্বাই, পাটনা ও চায়না থ্রি; এই তিন  জাতের লিচু করেছি। আশা করছি এবার চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাভ হবে।’

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্পসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ‘জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সীমান্তবর্তী তিনটি উপজেলায় লিচুর বেশি আবাদ হয়। এখানকার মাটি ভালো মানের হওয়াই প্রতিবছর বাড়ছে বাগানের সংখ্যা।’

সুশান্ত সাহা আরও বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতেই কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রার কারণে লিচু কিছুটা ছোট হলে কৃষকদের নিয়মিত সেচের পরামর্শ দিয়েছি। এবার চলতি মওসুমে জেলায় ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদিত হবে। যার বাজার মূল্য ৩০ কোটি টাকা হতে পারে।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন