মার্কিন
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি মন্তব্য নিয়ে আলোচনায় এসেছে আবারও
পাকিস্তান। ‘পাকিস্তান বিশ্বের একটি বিপজ্জনক জাতি’, বলেছিলেন বাইডেন। জো
বাইডেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর মধ্যে
একটি’ হিসেবে বর্ণনা করার পরে এবং এর পারমাণবিক অস্ত্র সুরক্ষা প্রোটোকল
নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে পাকিস্তান,ইসলমাবাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে
ব্যাখ্যার জন্য তলব করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ায়
একটি প্রাইভেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তহবিল সংগ্রহের সময় মার্কিন
পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বাইডেন এই মন্তব্য করেছিলেন। হোয়াইট
হাউজ পরে তার মন্তব্যের একটি প্রতিলিপি প্রকাশ করেছিল, যা পাকিস্তানে
ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। গত বছর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দশকের
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক তিক্ত
হয়েছে।
পাকিস্তান
গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক অ্যাক্সেস সরবরাহ করেছিল, কিন্তু মার্কিন
কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইসলামাবাদের শক্তিশালী সামরিক ও গোয়েন্দা
যন্ত্রপাতিও তালেবানকে সহায়তা করেছিল। যারা বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করার
সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতায় ফিরে আসে।
বাইডেন
চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার ঘন ঘন কথোপকথনের কথা বলছিলেন। তখন তিনি
বলেছিলেন, ‘কেউ কি ভেবেছিল যে, আমরা এমন পরিস্থিতিতে থাকবো, যেখানে
রাশিয়ার সঙ্গে চীন সম্পর্কিত এবং ভারতের সঙ্গেও সম্পর্কিত। একইসঙ্গে
পাকিস্তানের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
বাইডেনের
কথাগুলো এই সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হচ্ছে, প্যান্ডেমিক পরবর্তী
বিশ্বে শান্তির অন্বেষণ করছেন সবাই। কিন্তু এর প্রকৃত পথটি কী? তা নিয়ে,
চারিদিকে বেশ শঙ্কা। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৩ আরও সংকটময় হতে পারে! আসতে
পারে দুর্ভিক্ষও! একথা ঢকায় ফিরে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও! কোথায়
যাচ্ছে তাহলে আগামীর পৃথিবী!
রাশিয়ার
নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে তার যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র
ব্যবহার করার শঙ্কা উত্থাপন করেছেন। পুতিন এর আগেও এটি করেছেন, যদিও তিনি
গত কদিন আগের বক্তৃতায় আরও স্পষ্ট ছিলেন। তিনি বলেছেন, মিথ্যে বলছেন না!
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ১৯৪৫ সালে জাপানের ওপর দুটি
পারমাণবিক বোমা ফেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘নজির’ স্থাপন করেছিল।
তাহলে রাশিয়ান নেতার এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করার আশঙ্কা কী?
হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক ম্যাথিউ বুন বলছেন, ‘আমাদের ৭৭ বছরের ঐতিহ্য আছে, কেউ কেউ একে নিষিদ্ধ বলে, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার না করা। রাশিয়া সেই হুমকি দিচ্ছে।’ তিনি তার কর্মজীবন পারমাণবিক অস্ত্র অধ্যয়ন করে কাটিয়েছেন, যার মধ্যে ১৯৯০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের অফিসে থাকাকালীন একজন হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করতে হবে।’
রাশিয়ার
পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য ব্যবহারকে ঘিরে এখানে বেশ কয়েকটি মূল প্রশ্ন
রয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণে ভূমি পুনরুদ্ধার
করে চলেছে, যা রাশিয়া যুদ্ধের আগে দখল করেছিল। যুদ্ধক্ষেত্রের এই
বিপর্যয়ের সঙ্গে, পুতিন রাশিয়ার যুদ্ধপন্থী শিবিরের চাপের মুখোমুখি
হচ্ছেন। এই কট্টরপন্থীদের অনেকেই বলছেন, রাশিয়াকে ইউক্রেনে তার
সেনাবাহিনীর পূর্ণ শক্তি নামাতে হবে।
এটি
সম্ভবত পুতিনের সাম্প্রতিক সেনা বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। যার মধ্যে রয়েছে
তিন লাখ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন, ইউক্রেনের ভূখণ্ডকে সংযুক্ত করা এবং
পারমাণবিক স্যাবার র্যাটলিং করা। কী করতে চাইছেন পুতিন! রাশিয়ান নেতা
পুতিনই সম্ভবত একমাত্র ব্যক্তি, যিনি কর্তৃত্বের সঙ্গে এই প্রশ্নের উত্তর
দিতে পারেন। বেশিরভাগ পারমাণবিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার প্রকৃতপক্ষে
একটি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার আশঙ্কা এখনো তুলনামূলকভাবে কম। তবে
পুতিনের বর্তমান দুর্দশা এবং তার প্রকাশ্য বিবৃতি বিবেচনা করে হুমকিটি
ক্রমবর্ধমান হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
অধ্যাপক
ম্যাথিউ বুন আরও বলছেন, তার সর্বোত্তম অনুমান হলো রাশিয়া পারমাণবিক
অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, এমন আশঙ্কা ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ। যদিও এটি
জীবনের বেশিরভাগ জিনিসের জন্য একটি কম আশঙ্কা। যা একটি সুন্দর বিশ্বকে
আবারও পঙ্গু করে দিতে পারে!
প্রশ্ন আসছে, পারমাণবিক হামলা কিভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে সাহায্য করতে পারে? এটা স্পষ্ট নয় যে, এই ধরনের হামলা রাশিয়াকে বড় ধরনের সামরিক শক্তি দেবে। রাশিয়ার আনুমানিক দুই হাজার ছোট, কম শক্তিসম্পন্ন, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সৈন্যের ঘনত্ব, একটি সামরিক ঘাঁটি, সম্ভবত একটি বন্দর বা একটি বিমান ক্ষেত্র।
অধ্যাপক
ম্যাথিউ বুন নোট করেছেন যে ‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে একটি সমস্যা, বিশেষ
করে যদি আপনি সেগুলোকে মাটিতে বিস্ফোরণ ঘটান, যেখানে তারা একগুচ্ছ ময়লা
এবং শিলা বাতাসে চুষে ফেলে। সেই জায়গা যেখানে আপনি সেগুলো ব্যবহার করেন,
সেখানে তেজস্ক্রিয় পতনের কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে।’
রাশিয়া
প্রচলিত অস্ত্রের নিরলস ব্যারেজ দিয়ে কতটা ক্ষতি করতে পারে, তা ইতোমধ্যে
দেখা গেছে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরকে
প্রচলিত ফায়ার পাওয়ার দিয়ে ধ্বংস করেছে। বুন বলেন, রাশিয়া যদি
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তার উদ্দেশ্য হতে পারে মূলত ইউক্রেন এবং
পশ্চিমাদের ভয় দেখানো। বুন বলেন, ‘আমি মনে করি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের
সবচেয়ে বড় কারণ হল তারা যে ভয় উস্কে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুতিন আশা
করতে পারেন যে তিনি ইউক্রেনিয়ানদের তার শর্ত মেনে নিতে বাধ্য করতে পারেন,
তিনি পশ্চিমকে ইউক্রেনের সমর্থন থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে পারেন।’
এই সময়ে কী প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে ইউক্রেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র! আলোচনায় আসছে সেটাও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়ার এমন কোনো পদক্ষেপ দেখেনি যা যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিজস্ব পারমাণবিক অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য করবে।
ইউক্রেন
পুতিনের সাম্প্রতিক হুমকি সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলেনি তিনি। তবে
ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৯৮৬ সালের দুর্ঘটনার পরে
দেশটি পারমাণবিক বিপদ সম্পর্কে প্রথম চরম সংকট অনুদঘাবন করে। যা শেষ
পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের জীবন হরণ করেছিল।
ইউক্রেনে
বেসামরিক ব্যবহারের জন্য একাধিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকলেও দেশটির
কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে ইউক্রেন
একটি বড় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হয়। কিন্তু ইউক্রেন ১৯৯৪ সালের একটি
চুক্তির অধীনে তার পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেয়, যার অধীনে রাশিয়া
ইউক্রেনের সীমানাকে সম্মান করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
বিশ্ব-রাজনীতিতে এখন মূল আলোচনায় আছে, রাশিয়া আসলেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী করতে পারে? প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন একটি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ এড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু রাশিয়ার পারমাণবিক হামলা, এই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনতে পারে।
অধ্যাপক
ম্যাথিউ বুনের মতে, এই ধরনের আক্রমণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ান
সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। যদিও তিনি মনে করেন, মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে না। তার মতে,
‘লোকেরা ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর ওপর প্রচলিত হামলার মতো বিষয়গুলো নিয়ে
কথা বলেছে’। তিনি বলেছিলেন, ‘যে জিনিসগুলো রাশিয়ানদের জন্য অত্যন্ত
অপ্রীতিকর হবে এবং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের খরচকে যুক্তিসঙ্গত সুবিধার
চেয়ে বেশি করে তুলবে গোটা বিশ্ববাসীর জন্যে।’
কথা আসছে, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে, রাশিয়া কী ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আশা করতে পারে? রাশিয়া এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করছে। তবে পারমাণবিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবশ্যই বাড়বে। একই সঙ্গে রাশিয়ার অবশিষ্ট অংশীদাররা মস্কো থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চাইবে।
দুটি দেশ, চীন ও ভারতের প্রতিক্রিয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে। রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক প্রসারিত হচ্ছিল, কিন্তু যুদ্ধের গতিপথ নিয়ে বেইজিং এখন অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে। ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে নিরপেক্ষ থেকেছে এবং আরও বেশি রাশিয়ান তেল কিনছে। একটি রাশিয়ান পারমাণবিক হামলা সম্ভবত উভয় দেশকে মস্কোর সঙ্গে তাদের বর্তমান সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে।
রাশিয়া
সত্যিই বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন দেখতে চাইবে? পুতিন কি শেষ
পর্যন্ত কোটি মানুষ হত্যার দায় নিতে চাইবেন? তা নিয়ে আলোচনামুখর এখন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবী সমাজ।
রাটগার্সের
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক, জলবায়ু বিজ্ঞানী এবং গবেষক
লেখক অ্যালান রোবক বলেছেন, ‘এটি সত্যিই একটি সতর্কতামূলক গল্প যে,
পারমাণবিক অস্ত্রের যেকোনো ব্যবহার বিশ্বের জন্য একটি মহাবিপর্যয় হতে
পারে।’
মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পারমাণবিক
যুদ্ধের পুরনো ভয়কে পুনরুজ্জীবিত করছে। কিছু গবেষক সতর্ক করছেন, এমনকি
ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর মধ্যে সীমিত আকারের মতবিনিময় হচ্ছে এই
বিষয়ে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি হতে পারে এবং
বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
রাটগার্স
ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে একটি নতুন আন্তর্জাতিক সমীক্ষা
অনুসারে, একটি পারমাণবিক সংঘাত দুই বছরের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার এক
তৃতীয়াংশকে হত্যা করতে পারে। ন্যাচার ফুডে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে
রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বৃহত্তর পারমাণবিক সংঘর্ষ একই
সময়সীমার মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশকে হত্যা করতে পারে।
সম্প্রতি,
যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্টিফেন লাভগ্রোভ যুক্তি
দিয়েছিলেন, দেশগুলোর মধ্যে সংলাপের ভাঙন, সেইসঙ্গে কয়েক দশক আগে
পারমাণবিক পরাশক্তিগুলির মধ্যে তৈরি হওয়া সুরক্ষার ক্ষতি, বিশ্বকে ‘একটি
বিপজ্জনক নতুন যুগে’ নিমজ্জিত করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও
গুতেরেসও সতর্ক করে বলেন, ‘পরমাণু সংঘাতের আশঙ্কা, যা একসময় কল্পনাও করা
যেতো না, এখন আশঙ্কার রাজ্যে ফিরে এসেছে।’
যদিও
লেখক অ্যালান রোবক ও অন্যরা পূর্বে অনুমান করেছেন, পারমাণবিক যুদ্ধের ফলে
জলবায়ু এবং খাদ্য সরবরাহে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটবে। সাম্প্রতিক গবেষণায়
প্রথমবারের মতো গবেষকরা দুর্ভিক্ষের সম্ভাব্য মাত্রা গণনা করেছেন, যার ফলে
কতজন মানুষ মারা যেতে পারে,তার ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
বিশ্বের
পারমাণবিক অস্ত্রের একটি ছোট অংশের বিস্ফোরণটি বিশাল অগ্নিঝড়ের স্ফুরণ
ঘটাবে, যা দ্রুত বায়ুমণ্ডলে সূর্য-অবরোধকারী কালি ঢুকিয়ে দেবে। জলবায়ুর
হঠাৎ শীতলতাকে স্পর্শ করবে, গবেষকরা তত্ত্ব দিয়ে বলছেন। গবেষকরা জলবায়ু
মডেলগুলো ব্যবহার করেছেন গণনা করতে। কতটা ধোঁয়া স্ট্রাটোস্ফিয়ারে
পৌঁছাবে, যেখানে এটি ধুয়ে ফেলার জন্য কোনো বৃষ্টিপাত ঘটে না। এটি কিভাবে
তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যালোককে পরিবর্তন করবে। তারপরে তারা গণনা
করেছেন, এই পরিবর্তনগুলো কিভাবে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদনকে প্রভাবিত করবে,
সেইসঙ্গে সমুদ্রের পরিবর্তনগুলোতে কিভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বিশ্বের
পানিসম্পদ!
ফলস্বরূপ,
তারা অনুমান করেছেন যে, যুদ্ধ অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ তাৎক্ষণিক প্রাণহানির পর
বিশ্বজুড়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষের অনাহারে মৃত্যু হবে।
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উত্তাপের কারণে, ওজন স্তরের ধ্বংসের কারণে ফসলের ওপর
বর্ধিত অতিবেগুনী বিকিরণের প্রভাব বিবেচনা না করেই ধ্বংসলীলা ঘটতে পারে।
না,
এমন অবস্থা আমরা কল্পনা করতে চাই না। বিশ্বের সব কালো দাগ মুছুক।
সংকটগুলোর সমাধান হোক। বিশ্ব তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখতে চায় না, এই
প্রযুক্তির যুগে।