১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার



গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ধানমন্ডি ৩২

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২:০২ পিএম
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ধানমন্ডি ৩২


রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি এক্সক্যাভেটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বাড়িটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিনও বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় দফায় বাড়িটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হলো। গতকাল রাত ৮টায় বিক্ষোভ-ভাঙচুর শুরু হয়। রাত ২টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও বাড়িটি ভাঙা হচ্ছিল।

শুধু ধানমন্ডির ৩২ নম্বর নয়, ধানমন্ডি ৫ নম্বরে শেখ হাসিনার বাড়ি সুধা সদনেও গতকাল অগ্নিসংযোগ করা হয়। একইভাবে খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় অবস্থিত শেখ বাড়িও (শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি) এক্সক্যাভেটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এর আগ পর্যন্ত তা ব্যবহার হচ্ছিল জাদুঘর হিসেবে। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়াকে কেন্দ্র করে ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্রজনতা’ শীর্ষক একটি ব্যানার থেকে ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিলের’ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়। পাশাপাশি ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ঘোষণাও করা হয়।

গতকাল রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচারের কথা ছিল। একে কেন্দ্র করে আজ বিকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি।

এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন পেজে ঘোষণা আসতে থাকে—ঠিক যে সময়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়া শুরু হবে, ঠিক তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে। তবে তার আগেই রাত ৮টার দিকে সেখানে ঢুকে ভাঙচুর শুরু হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৭টার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ধানমন্ডি ৫/এ-তে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন দেয়া হয়। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার পর সেখানে আগুন দেয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

খুলনায় রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার এনে শেখ বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া শুরু করে। স্থানীয়রা জানান, এ বাড়িতে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন থাকতেন। মূলত ওই বাড়ি থেকেই খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো বলে কথিত রয়েছে।

এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনায় থেকে মুজিব পরিবারের সদস্যদের নাম মুছে দিতে ভাঙচুর ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। চট্টগ্রামেও কয়েকটি স্থানে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বাড়ির দেয়ালও এক্সক্যাভেটর ব্যবহার করে ভেঙে ফেলা হয়েছে।



আরো পড়ুন