দিনাজপুরের হিলিতে বসছে পুরনো বাইসাইকেলের হাট। সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার এই হাট বসে। এই হাটে কেউ আসেন পুরনো বাইসাইকেল বিক্রি করে ভালো বাইসাইকেল কিনতে। আবার কেউ নতুন বাইসাইকেল বিক্রি করে একটু কম দামের পুরনো বাইসাইকেল কিনতেও। রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে পুরনো বাইসাইকেলের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
পাঁচবিবির আটাপাড়া থেকে সাইকেল বিক্রি করতে আসা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রতিদিন হিলি বাজারে বাইসাইকেলে করে সবজি নিয়ে আসি। কিছুদিন আগে ৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাইসাইকেল কিনি। কিন্তু ব্যবসার অবস্থ ভালো না। পুঁজি সংকটে পড়েছি। তাই এই বাইসাইকেলটি বিক্রি করে দেবো। বিক্রির টাকা থেকে অল্প দামে একটি পুরনো বাইসাইকেল কিনবো। আর যে টাকা বাঁচবে তা দিয়ে আবারও ব্যবসা শুরু করবো। আমার ব্যবসা করতে বেশি টাকা লাগে না। সাইকেলে করে আলু, পুইশাক, লালশাক, বেগুন গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করি। তাতে যা লাভ হয়, তা দিয়ে ৪ সদস্যের পরিবারের খরচ কোনোমতে চলে।’
মংলা গ্রামের মো. সৈকত আলী বলেন, ‘আমি ছাত্র। স্কুলে লেখাপড়া করি । বাবার পুরনো সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতাম। কিন্তু পুরনো সাইকেল তো মাঝেমধ্যে চেইন পড়ে যায়। হ্যান্ডেল বাঁকা হয়ে গেছে। জোরে চালনো যায় না। আর সবচেয়ে বড় কথা সহপাঠীরা সবাই নতুন সাইকেল কিনেছে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে এই পুরনো বাইসাইকেল শোভা পায় না। তাই মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে এসেছি। দেখি পুরনো বাইসাইকেলটা কত টাকা বিক্রি হয়। তারপর মায়ের দেওয়া টাকাটা যোগ করে যদি দরদামে মেলে, তাহলে একটি ভালো বাইসাইকেল কিনবো।’
হিলি সাইকেল বাজারের ইজাদার মো. নাহিদ হোসেন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘হিলিতে প্রতি হাটবারে পুরনো বাইসাইকেলে কেনা-বেচা হয়। দুপরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচা-কেনা। হাট ইজারা বাবদ বাইসাইকেল ক্রেতাদের কাছ থেকে ৮০ টাকা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৮০ টাকা করে টোল নেওয়া হয়। তবে, এখন বেচা-কেনা ভালো যাচ্ছে না। আগের চেয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যাও অনেক কম। কিছুদিন পর হয়তো বেচা-কেনা বাড়তে পারে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/