১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

শিশুদের কেন রক্তশূন্যতা হয়

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০৬ জুলাই, ২০২৪, ০৪:৩৭ এএম
শিশুদের কেন রক্তশূন্যতা হয়


অনেক শিশুই হঠাৎ করে চাঞ্চল্য জীবনযাপন থেকে নীরব হয়ে যান। তাকে আর আগের মতো খেলাধুলা করতে দেখা যায় না, আগের মতো শক্তিশালী থেকে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যেতে থাকে। আবার মেজাজও কেমন যেন খিটখিটে হয়ে যেতে দেখা যায়। কাউকে আবার ফ্যাকাশেও দেখায়।

কোনো শিশুর ক্ষেত্রে যদি এসব লক্ষণীয় হয়, এ অবস্থায় পরীক্ষা করা হলে দেখা যায় রক্তশূন্যতায় ভুগছে সেই শিশু। এ ধরনের সমস্যা অনেক শিশুরই হয়ে থাকে। সাধারণত সবার ধারণা, রক্তশূন্যতা শুধু বড়দের হয়। আসলে এটি ভুল ধারণা। বাড়ির ছোট সন্তানদেরও হয়ে থাকে রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া)।

শিশুদের রক্তশূন্যতার কারণ ও চিকিৎসা আলাদা হয়ে থাকে। আর রক্তশূন্যতা হওয়া মানে রক্তের পরিমাণ কমে যাওয়া নয়। বয়স ও লিঙ্গভেদে রক্তের লোহিত কণিকায় বিদ্যমান হিমোগ্লোবিন কাঙ্ক্ষিত পরিমানের থেকে হ্রাস পাওয়াকে বলা হয় রক্তশূন্যতা। শিশুদের এই রোগ হওয়ার অর্থ হচ্ছে তার অঙ্গগুলো যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ঠিকমত পাচ্ছে না। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফারাহ দোলাবিশেষ। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

শিশুর রক্তস্বল্পতা হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে তিনটি। প্রথমত, লোহিত রক্তকণিকা প্রয়োজনমত উৎপন্ন না হওয়া; দ্বিতীয়ত, যদি লোহিতকণিকা ভেঙে যায় এবং তৃতীয়ত রক্তপাতসংক্রান্ত কারণে রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।

একজন শিশু যখন জন্ম নেয়, অর্থাৎ নবজাতক অবস্থায় উচ্চ পরিমাণ হিমোগ্লোবিন নিয়েই জন্ম নেয় শিশু। এরপর বয়স বাড়তে বাড়তে দুই মাসের মতো হলে সেই পরিমাণ কমে যেতে থাকে। যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময় শিশুর জন্য বুকের দুধ যথেষ্ট। লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্নের জন্য আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি১২ উপাদান প্রয়োজন। আর শিশুর খাদ্যে যদি এসব উপাদানের ঘাটতি থাকে তাহলে রক্তশূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে।

লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়াকে বলা হয় হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া। যা বিভিন্ন রোগের জন্য হয়ে থাকে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া। আবার রক্তপাতের জন্যও শিশুর রক্তশূন্যতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন অন্ত্রে কৃমির সংক্রমণ ও হিমোফিলিয়া হওয়া। এছাড়াও কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ শিশুদের রক্তশূন্যতার সমস্যা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে আয়রনের অভাব, একিউট লিউকেমিয়া, অ্যাপ্লাসটিক অ্যানিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, ক্রনিক রেনাল ফেইলিউর। আমাদের দেশে সাধারণত আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে শিশুদের রক্তশূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে। শিশুর এক বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত শরীরে হিমোগ্লোবিন প্রতি ডেসিলিটারে ১১ গ্রামের কম পরিমাণ থাকলে রক্তশূন্যতায় ভুগে শিশু।

শৈশবে যদি আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় তাহলেও রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অপরিণতভাবে জন্ম বা জন্মের সময় ওজন ২৫০০ গ্রাম বা এর কম হওয়া (লো বার্থওয়েট), শিশুকে গরুর দুধ পান করানো, দীর্ঘদিন শুধু বুকের দুধ পান করানো, বক্র কৃমির সংক্রমণ ও ছয় মাস বয়স হওয়ার পর থেকে ‍বুকের দুশের পাশাপাশি শিশুকে পরিপূরক খাবার না খাওয়ানো। এসবের কারণে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং এ থেকে রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে।



আরো পড়ুন