চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের গীতিকার সৈয়দ মহিউদ্দিন আর নেই। রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর মির্জাপুল এলাকার বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে সৈয়দ মহিউদ্দিনের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি অকৃতদার ছিলেন। সৈয়দ মহিউদ্দিনের শিষ্য শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তাহের বলেন, ‘২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ডিসি হিলে এক অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেদিন তিনি ক্রেস্ট ও সনদ নিয়ে মঞ্চ ত্যাগ করার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে বাম হাত ও বাম পা ভেঙে ফেলেন। মূলত এরপর গত আট বছর ধরে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘গত ১২ মার্চ তিনি তৃতীয় দফা স্ট্রোক করে বাকশক্তি পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সপ্তাহখানেক আগে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। আজ (রোববার) সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।’
রোববার দুপুরে সৈয়দ মহিউদ্দিনকে শেষবারের মতো চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিকেল ৪টার দিকে তাকে নিজ গ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার সুয়াবিলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
মহি আল ভাণ্ডারী নামে সমধিক পরিচিত সৈয়দ মহিউদ্দিন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের পাশাপাশি আধুনিক ও মাইজভাণ্ডারি গানও রচনা করেন। শৈশবেই সঙ্গীত চর্চা শুরু করে মহিউদ্দিন পরবর্তী সময়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিয়েছিলেন। গানের মাধ্যমে সমাজ বদল ও সমাজের রীতি সংস্কারের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। বেশ কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন তিনি।
শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের বলেন, ‘খ্যাতিমান শিল্পী তপন চৌধুরী ‘জলের অপর নাম জীবন হয়েছে’ গেয়ে বেতারে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন। গানটি সৈয়দ মহিউদ্দিনের লেখা ছিল। ‘পুষ্পকরথ’ নামে তার প্রায় দুইশ গান নিয়ে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তার আরও হাজারখানেক গান আছে।’