মো. আলিমুদ্দিন। বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার শিমুলতলী গ্রামে। ৩০ বছর ধরে হাতের তৈরি চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালিয়ে আসছেন। প্রতিদিন আশপাশের কোনো কোনো হাটে চানাচুর বস্তায় ভর্তি চানাচুর নিয়ে হাজির আলিমুদ্দিন। হাটের বসেই পাল্লায় মেপে পলিথিনের প্যাকেটে ভরে বিক্রি করেন তিনি। বিক্রিও হয় বেশ ভালো। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে হিলিহাটে আলিমুদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।
আলিমুদ্দিনের দোকানে চানাচুর কিনতে আসা মো. জাফর আলী বলেন, ‘গ্রামের আমার নিজের দোকান আছে। আমি এখান থেকে চানাচুর কিনে নিয়ে দোকানে খুচরা বিক্রি করি। ছোট বাচ্চারা এই চানাচুর খুব বেশি কেনে। এখান থেকে পাইকারি ১২০ টাকা কেজি কিনে গ্রামে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করি। ১
কেজি তো আর কেউ নেয় না । তাই প্রতি ১০০ গ্রাম ১৫ টাকায় বিক্রি করি।’
জাফর আলী আরও বলেন, ‘আলিমুদ্দিনের চানাচুরে ঝালের চেয়ে মিষ্টির পরিমাণ বেশি থাকায় বাচ্চারা এই চানাচুর বেশি কেনে। অনেক সময় বড় মানুষেরাও কেনে। গ্রামের দোকান তো বেশ ভালোই বিক্রি হয়।’
আরেক ক্রেতা মোছা. সুখি বেগম বলেন, ‘আমি হাটবারে বাড়ির বাচ্চাদের জন্য এখান থেকে ৫০০ গ্রাম করে চানাচুর কিনে নিয়ে যাই। চানাচুরে মিষ্টির পরিমাণ বেশি থাকায় বাচ্চাদের মুড়ির সঙ্গে মেখে দিলে বেশ মজা করে খায় তারা। তাই এই চাচার কাছ থেকে চানাচুর কিনতে আসা।’
পাশের দোকানদার মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই আলিমুদ্দিনকে এখানে চানাচুর বিক্রি করতে দেখছি। তিনি প্রতিহাট বারে (বৃহস্পতিবার ও রোববার) সড়কে বসে চানাচুর বিক্রি করেন। বিক্রি মোটামুটি ভালোই হয়।’
চানাচুর বিক্রেতা আলিমুদ্দিন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে হাতে তৈরি চানাচুর বিক্রি করি। ময়দা, চিনি, তেল কিনে নিয়ে বাড়িতে চালুনি দিয়ে নিজের হাতে প্রথমে তেলে চানাচুর ভেজে নেই। পরে কম পরিমাণে ঝাল আর বেশি পরিমাণে চিনি দিয়ে চানাচুর তৈরি করে আশপাশের হাট-বাজারে বিক্রি করি।’
আলিমুদ্দিন আরও বলেন, ‘এখন সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাই খুব একটা লাভ হয় না। কেউ ১ কেজি নিলে ১২০ টাকা আর খুচরা নিলে ১৪০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করি। এই বয়সে আর কিছু করার মতো ক্ষমতা নেই । তাই এই পেশাকেই আঁকড়ে ধরে আছি।’
ঢাকা বিজনেস/এনই