দীর্ঘ অপেক্ষার পর দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা তুলসীগঙ্গা নদীর ওপর প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন সেতু। এলাকাবাসী বলছেন, বারবার জনপ্রতিনিধিরা এই সেতু তৈরি প্রতিশ্রতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। অবশেষে বর্তমান সরকারের সময় তৈরি হচ্ছে সেতুটি। এই সেতু তৈরি হলে দুই উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ হবে। এর আগে, ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকা বিজনেসে ‘একটি সেতুর অভাবে ২ উপজেলা ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, ইতোমধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে বেশকিছুদিন সময় লাগবে।
কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দিনাজপুরের দক্ষিণ দিকের উপজেলা হাকিমপুর। আর পৃর্বদিনের উপজেলা ঘোড়াঘাট। হাকিমপুর উপজেলার পৃর্ব-দক্ষিণদিনের গ্রামটির নাম কাশিয়াডাঙ্গা। এখানে আছে ছোট তুলসীগঙ্গা নদী। নদীতে থেকে পৃর্বদিকে শুরু হয়েছে ঘোটাঘাট উপজেলার সীমানা। নদীটির দু’পাশে আছে দুই উপজেলার ১০ গ্রাম। কিন্তু তুলসীগঙ্গা নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় ওই ১০ গ্রামের মানুষদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। হাকিমপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গাসহ ৫ গ্রামের মানুষদের কৃষিপণ্যসহ আত্মীয়স্বজনদের বর্ষার সময় পারাপার হতে হতো নৌকায়। আবার ঘোটাঘাট উপজেলার ৫ গ্রামের মানুষেরাও একইভাবে হাকিমপুর উপজেলায় যাওয়া-আসা করতো। তাদের একমাত্র ভরসাই ছিল নৌকা।’
স্থানীয় যুবক মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা যুবসমাজের কিছু ছেলে করোনাকালে বাড়িতে অবসর সময় কাটানোর সময় মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে নিজস্ব অর্থায়নে নদীটির ওপর বাশেঁর খুঁটির দিয়ে কাঠ বিছিয়ে প্রায় ৪০০ ফুট একটি সেতু তৈরি করি। ওই কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে এতদিন একটি ভ্যান, বাইকসহ মানুষ চলাচল করে আসছিল। কিছুদিন আগে সেটিও ভেঙে জরাজীর্ণ হয়ে যায়। আমাদের দাবি ছিল, এই তুলসীগঙ্গা নদীতে স্থায়ী একটি পাকা সেতু নির্মাণের। অবশেষে আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।’
হাকিমপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনোয়ার হোসেন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘হাকিমপুরের তুলসীগঙ্গা নদীতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্থায়ী সেতু। যা লম্বায় ৩১৪ ফুট ও প্রস্থে ৩৯ ফুট। ইতোমধ্যে সেতুটির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে আরও বেশকিছুদিন সময় লাগবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করে, সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট আছি।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/