টাঙ্গাইলে উৎসব মুখর পরিবেশে তিন দিনব্যাপী পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে এই পিঠা উৎসব শুরু হয়। এই উৎসবের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওলিউজ্জামান। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পিঠা উৎসব শেষ হবে।
জেলা কালচারাল অফিসার এরশাদ হাসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত পিঠা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী।
পিঠা বিক্রেতা আশা আক্তার বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা নিয়ে বসেছে। বাসার তৈরি এসব পিঠা সবাই পছন্দ করছেন। আয়োজকদের কাছে দাবি প্রতিবছর যাতে এ ধরনের আযোজন করে।’
পিঠা উৎসবে আসা স্কুল শিক্ষার্থী অপেক্ষা বলে, ‘পিঠা উৎসব আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। শীতকাল এলেই আমাদের বাড়িতে মা পিঠা বানায়। সকলের সাথে পিঠা খেতে বেশ ভালো লাগে।’
পিঠা খেতে আসা আল আমিন বলেন, ‘এটি শুধু পিঠা উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির অন্যন্য প্রকাশ। বর্তমানে জীবন ব্যবস্থার মধ্যে যে মাদক, জঙ্গিবাদ, দুনীর্তি, বাল্য বিবাহ রয়েছে এগুলো যাতে কমে আসে এবং ধীরে ধীরে যাতে সমাজ থেকে এগুলোর অবমুক্তি ঘটে। সেটাই এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে একটি প্রকাশ।’
আরেক দর্শনার্থী রিমি আক্তার বলেন, ‘শীতকাল আমাদের অনেকের কাছেই প্রিয়। বাঙালি ঐতিহ্যগত কারণে এ ঋতুর সঙ্গে পিঠার অন্যরকম মিল রয়েছে। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মিলনমেলা তৈরি হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জেলা কালচারাল অফিসার এরশাদ হাসান বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়া বাঙালীর পিঠা-পুলির ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মকে তুলে ধরতে এমন আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবে অংশ গ্রহণ করা সেরা ৩ জনকে পুরস্কার দেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওলিউজ্জামান বলেন, ‘গ্রাম বাংলার এ উৎসব প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এমন আয়োজন করা হবে।’
পিঠা উৎসবে স্টলে স্টলে শোভা পাচ্ছিল বাঙালি ঐতিহ্যের নানা রকম পিঠার সমাহার। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য জামাই পিঠা, মুখশালা পিঠা, কাজু বরফি, জালি পিঠা, আমদশা, মেরা পিঠা, পাকন পিঠা, নুরের ঝাল পিঠা, চিতই পিঠা, ভাঁপা পিঠা, পোয়া পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, নকশি পিঠা, মাংস পিঠাসহ বিভিন্ন পিঠা স্থান পায়। হৈহুল্লার, আড্ডা এবং নাচগানে মেতে উঠেন অনেকেই। আশপাশের সাধারণ মানুষ এই উৎসব উপভোগ করেন।
ঢাকা বিজনেস/নোমান/এনই