বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও আরএসএস থ্রেড অ্যান্ড এক্সেসরিজ লিমিটেডের আয় কমেনি বলে জানিয়েছেন কোম্পানির পরিচালক মুহাম্মদ আবু জাফর। তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস খাতের এই কোম্পানি স্বমহিমায় এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা, দক্ষতা ও সৎ ম্যানেজমেন্টের কারণে মূলত এটি সম্ভব হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় নিজ কার্যালয়ে ঢাকা বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু জাফর বলেন, ‘আসলে সেল বা টার্নওভার নির্ভর করে কোম্পানির অনেকটা নিজস্ব দক্ষতা, মার্কেটিং পলেসি ও ব্যবসা পরিচালনার ওপর। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিসহ বৈশ্বিক নানা স্বীমাবদ্ধতার মাঝেও আমাদের কোম্পানি মুনাফায় রয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে আমাদের টার্নওভার ছিল প্রায় এক শ কোটি টাকা। আমরা মার্কেটিং পলিসি নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছি। ফলে আমরা যেভাবে রেসপন্স পাচ্ছি, তাতে আগামী ২০২৩ সালের ৩০ জুনে টার্নওভার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে।’
আরএসএস থ্রেড অ্যান্ড এক্সেসরিজ লিমিটেডের এই পরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা গার্মেন্টস এক্সেসরিজ সাপ্লাই করি লোকাল ফ্যাক্টরিগুলোতে। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোর সঙ্গে আমাদের সরাসরি ব্যবসা। আমাদের চার ধরনের গার্মেন্টস এক্সেসরিজ আছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে-অফসেট আইটেম, বিভিন্ন ধরনের লেবেল, ন্যারো ফেব্রিকস ও প্যাকেজিং পলি। আমাদের পণ্য সরাসরি এক্সপোর্ট হয় না। গার্মেন্টসের সঙ্গে আমাদের পণ্য ট্যাগ হয়ে এক্সপোর্ট হয়। ফলে গার্মেন্টসের এক্সপোর্ট বাড়লে আমাদের বিজনেস ভালো হয়। এটা সামগ্রিক অর্থে বললাম। কিন্তু যদি এককভাবে বলি, তাহলে বর্তমান নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। আমাদের প্রডাকশন যদি অব্যাহত থাকে, তবে টার্নওভার বাড়বে।’
আবু জাফর আরও বলেন, ‘এখন বিদ্যুৎ যদি না থাকে, গ্যাসের দাম যদি বাড়ে, জ্বালানি যদি না থাকে, তবে প্রডাকশন করা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মোট শ্রমিক,কর্মচারী,কর্মকর্তা রয়েছেন ৮ শতাধিক। আমাদের সব এমপ্লয়ির জন্য প্রভিডেন্ড ফান্ড ইমপ্লিমেন্ট করেছি। চলতি বছরে ডব্লিউপিপিএফ বাস্তবায়ন হচ্ছে। অন্যান্য লেবার অ্যাক্ট ইমপ্লিমেন্ট করছি। গার্মেন্টসের সব কমপ্লায়েন্স ইস্যু আমরা অনুসরণ করে থাকি। কমপ্লায়েন্সের ওপর আমাদের সাতটি সার্টিফিকেট আছে। অর্থাৎ আমরা লেবার রুল থেকে শুরু করে গার্মেন্টসের সব কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করি। এছাড়া কমপ্লায়েন্সের বাইরেও এমপ্লয়িদের নানারকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি।’
গাজীপুরের চন্দ্রায় কোম্পানির ১২ একর জায়গা রয়েছে জানিয়েছে আবু জাফার বলেন, ‘ভবিষ্যতে ওখানে ব্যবসা সম্প্রসারণে যদি আমরা যাই, তবে ব্যাংক লোন বা অন্য কোনো উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করা লাগতে পারে। আগামী ৫/৬ বছরের মধ্যে অমাদের সরাসরি গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আমাদের ফ্যাক্টরি হবে গ্রিন ফ্যাক্টরি। এছাড়া, বিশ্বের ফেমাস কয়েকটি বায়ারের নমিনেটেড হিসেবে দেশে আমরা কাজ করছি।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আবু জাফর বলেন, ‘এই মুহূর্তে ক্যাপিটাল মার্কেটে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। ভবিষ্যতে আমাদের সব পরিচালকরা যদি এই ব্যাপারে একমত হয়, সেক্ষেত্রে হয়তো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারে আমাদের কোম্পানি।’
ঢাকা বিজনেস /এনই/