মানসিক স্বাস্থ্য বলতে মানসিকভাবে ব্যক্তির সুস্থতাকে বোঝায়। একজন ব্যক্তি যদি চারপাশের সব স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিকতা দেখার পর নিজেকে সুন্দর, সুস্থ ও দেশের সুনাগরিক হিসেবে পরিচিত করাতে পারে, তখন তাকে একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত যত্নশীল থাকতে হয়, তার থেকেও বেশি যত্নশীল হতে হয় শিশুদের প্রতি।
শারীরিকভাবে শিশুর বেড়ে ওঠা অনেকটা নির্ভর করে তার খাদ্যাভাসের উপর। কিন্তু মানসিকভাবেও শিশু কতটুকু ভালো তার দিকেও রাখতে হবে বিশেষ নজর। আর শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি থাকে তার পরিবারের হাতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে তার নিজের ভাল লাগা, মন্দ লাগা, আবেগ, কষ্ট—এই সব অনুভূতির সঙ্গে কিভাবে মানিয়ে চলতে পারবে, তার অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যায় ছোটবেলায়।
ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করা ছোট বলে শিশুদের সব বিষয়ে অযাচিতভাবে ঢুকে পড়া ঠিক নয়। এতে পরবর্তী কালে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। বড় হলে সে-ও এমন ব্যবহারে অভ্যস্ত হবে। অন্যদের কথার মধ্যে জোর করে ঢুকে পড়ার প্রবণতা তৈরি হবে। অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে সংযত হতে হবে। শিশুরা ছোট, বুঝতে পারবে না ভেবে তাদের সামনে এমন কোনো কথা বলবেন না, যা বলার কথা নয়।
নিজের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা শিশুদের মনে সারাক্ষণই নানা প্রশ্ন ভিড় করে। কিন্তু কোথায় কোন প্রশ্ন করা উচিত বা কোথায় কোন কথা বলা উচিত নয়, সে বিষয়ে তাদের জ্ঞান থাকে না। তাই অনেক অভিভাবক সন্তানকে ভয় দেখান। যাতে তারা মানুষের সামনে কোনও প্রশ্ন করে মা-বাবাকে বিপদে না ফেলে। কিন্তু এই ভয় থেকেই জন্ম নেয় কুণ্ঠাবোধ। যা পরবর্তী কালে শিশুর মত প্রকাশের ক্ষমতা নষ্ট করে। সেজন্য শিশুদের ভয় না দেখিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে বলা উচিত।
তাকে নিশ্চিত করুন যে আপনি সবসময় তার সঙ্গে আছেন ও থাকবেন। তাদের মাঝে-মধ্যে ভুল করতে দিন। সব সময় শিশুকে সংশোধন করতে যাবেন না, তাদের জীবন, সময়, টাকা ও কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব বুঝতে দিন। তাদের নিজের কাজ ও দায়িত্বের ভার নিজের কাঁধে নিতে শিক্ষা দিন। এভাবেই তার মানসিক স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখা সম্ভব হবে।
ঢাকা বিজনেস/এন/