ওপার বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। বেশ কয়েকদিন আগে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ‘ইডি আমায় ডাকবে না’ এ রকমই আত্মবিশ্বাস ছিল তার গলায়। তবে শিগগিরই প্রতারণার মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কলকাতার অভিনেত্রী ও সাংসদ নুসরাত জাহান।
নুসরাতের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল দিনকয়েক আগে। অভিনেত্রী, বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের নামে অভিযোগটি জমা পড়েছিল ইডির কাছে। বেশ কয়েকজন প্রবীণ নাগরিক ইডির দপ্তরে অভিযোগ জমা করেছিলেন। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ডাক পড়ল নুসরাতের। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। সঙ্গে তলব করা হয়েছে সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর রাকেশ সিংকেও।
সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার অধিকর্তা তথা ডিরেক্টর ছিলেন নুসরাত। আরেক ডিরেক্টর ছিলেন রাকেশ সিং। অভিযোগ- ২০১৪ সালে তাদের সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা করে নিয়েছিল তিন বিএইচকে ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে। ৯ বছর কেটে যাওয়ার পর আজও ফ্ল্যাট পাননি কেউ। সেই সময় ৩ বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
কিছু দিন আগেই বিজেপির যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা এই প্রতারণার শিকার হওয়া মানুষগুলোকে নিয়ে ইডি দপ্তরে গিয়ে নালিশ জানিয়ে আসেন। নুসরাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে- অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মীদের টাকা মেরে তিনি নিজের ফ্ল্যাট কিনেছেন।
এর আগে এই অভিযোগ ওঠার পরপরই একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন নুসরাত জাহান। যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, যে সংস্থাকে ঘিরে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, সেই সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিনি নিজের ফ্ল্যাট কেনেন। তিনি সুদসমেত সেই ঋণ পরিশোধও করেছেন। নুসরাত টাকার অঙ্কে হিসাব দিয়ে জানান, ২০১৭ সালের ৬ মে ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা তিনি ঋণ নিয়েছিলেন। সুদসহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে দাবি করেন, ২০১৭ সালের ১ মার্চ তিনি রিজাইন করেছিলেন সেই কোম্পানি থেকে। তাই কোনো দায় তিনি নেবেন না।
এদিকে রাকেশ সিং দাবি করেন, সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কোনো ঋণই নাকি দেওয়া হয়নি নুসরাত জাহানকে। নুসরাতের বক্তব্যে হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তার বক্তব্যই গোলমাল পাকিয়েছে। উঠছে সমালোচনা। চাপে পড়ছে তৃণমূল। ইডিও সন্দিহান নায়িকার কথাবার্তায়। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে তাকে। কলকাতার সিনেমাপাড়ায় ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ ভাবছেন, কোনো কিছুতে গরমিল পেলে নুসরাতকে আটকও করতে পারে ইডি।
ঢাকা বিজনেস/এন