গাইবান্ধায় হঠাৎ করে আলুর দাম বাড়তে শুরু করেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, কেজিতে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। হঠাৎ আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, কোল্ড স্টোরগুলোতে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। তবু অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়েছে। তাদের মতে, সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট দেখিও আলুর দাম বাড়িয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যেমতে- ২০২২-২৩ অর্থবছরে গাইবান্ধায় ১০ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়। এবার আলুর উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন। আর বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৯ মেট্রিক টন। চাহিদা অনুযায়ী এসব আলু ছাড়াও জেলার ৫টি কোল্ড স্টোরে আরও মজুদ আছে ২৯ হাজার ৬৩৩ মেট্রিক টন আলু।
গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারে আলু কিনতে আসা মিজবাহুল ইসলাম বলেন, ‘তরকারির মধ্যে আলুই হচ্ছে প্রধান সবজি। দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গে এটি কমবেশি থাকে। এর আগে আলু ছাড়া সব ধররনের সবজির দাম বেড়েছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আলুর দামও। বর্তমানে বিভিন্ন জাতের আলু ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।’
আরেক ক্রেতা আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, ‘রিকশাভ্যান ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার ৪ সদস্যের হাঁড়িতে প্রত্যেকদিন অন্তত ১ কেজি আলুর চাহিদা রয়েছে। এখন দাম বাড়ার কারণে হাফ কেজি করে আলু কেনা হচ্ছে। এভাবে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ছে। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।’
খুচরা বিক্রেতা ফুল মিয়া বলেন, ‘কোরবানি ঈদের একসপ্তাহ আগে আলুর দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে ছিল। এরই মধ্যে ব্যাপারিদের কাছ থেকে বেশি দামে আলু কেনার ফলে কিছুটা লাভ রেখে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। হঠাৎ এই আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় অস্থির হয়ে উঠেছেন মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ।’
পাইকারি বিক্রেতা (ব্যাপারি) সেলিম মিয়া বলেন, ‘গাইবান্ধার ধাপেরহাট ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকার হিমাগার থেকে আলুর বস্তা কেনা হচ্ছে। কোরবানির ঈদ থেকে আলুর বাড়তি চাহিদার কারণে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।’
ধাপেরহাট আরভি কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই হিমাগারে পর্যাপ্ত আলু মজুদ আছে। ইদানিং আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা অনিয়মিত আলু বের করছেন। ’
গাইবান্ধা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালাম বলেন, ‘শুধু আলুই নয়, কেউ যেন অতিরিক্ত দামে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে না পারে, সে বিষয়ে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই