ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেণ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। তবে যারা সত্য সাংবাদিকতা করেন, তাদের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই প্রভিশন থাকবে।’ বুধবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত ‘শেপিং আ ফিউচার অব রাইটস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আজও বলছি, এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, শুধু সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ করার জন্য। এই আইনের মিসইউজ ও অ্যাবিউজ কমানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটা আইনের মধ্যেই সাংবাদিকদের, যারা সত্য সাংবাদিকতা করেন, তাদের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই প্রভিশন থাকবে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গুরুত্ব তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রচলিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোকে সর্বক্ষণ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করে টিকে থাকতে হয়। সেকারণে তাদের সবসময় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। কিন্তু অনলাইন মিডিয়া ও স্যোসাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে এই দায়িত্বশীলতার বড়ই অভাব দেখা যায়। যেকারণে হর-হামেশাই এসব নিউজ মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এসব সাইবার অপরাধ দমনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।’
সাইবার অপরাধ দমনের জন্য সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম. ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে আইন প্রণয়নের উদাহরণ টেনে আনিসুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারও ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে একটি আইন প্রণয়ন করেছে। আইনটি প্রণয়নের পূর্বে এডিটরস কাউন্সিল, এ্যাটকো, সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। এমনকি এই আলোচনার দ্বার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আইনটি বাস্তবায়নের প্রথম দিকে, এর কিছু মিসইউজ ও অ্যাবিউজ হয়েছে- এটি আমি অস্বীকার করবো না। তবে আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সেই মিসইউজ ও অ্যাবিউজ আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। এসব মিসইউজ ও অ্যাবিউজ আরও কমানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করেই বলতে পারি, শেখ হাসিনার সরকার কখনো সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতা হরণ করবে না। কারণ বঙ্গবন্ধু তার দেওয়া সংবিধানে সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দানসহ একে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তিনি সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতাকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা ছাড়াও ৪০টির অধিক টেলিভিশন চ্যানেল, ২২টি এফএম রেডিও এবং ১৭টি কমিউনিটি রেডিও অনুমোদন দিয়েছেন।’সূত্র: বাসস
ঢাকা বিজনেস/এনই/