ফরিদপুরে পথে-পথে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সোনালু ফুল


ঢাকা বিজনেস ডেস্ক , : 26-04-2023

ফরিদপুরে পথে-পথে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সোনালু ফুল

ফরিদপুরে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সোনালু ফুল। সবুজ কচি পাতার ফাঁকে হলুদ বর্ণের সোনালু ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলেছে। ফরিদপুর জেলার  বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার পাশে ছোট বড় সোনালু গাছে শোভা পাচ্ছে এসব ফুল। 

প্রকৃতিকে নয়নাভিরাম রূপে সাজাতে ও পরিবেশের শোভাবর্ধনে সোনালু গাছ সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়ে থাকে। কালের পরিক্রমায় এই গাছ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে খুব কম সংখ্যক গাছ চোখে পড়ে।

শীতে সমস্ত পাতা ঝরে গিয়ে সোনালু গাছ থাকে পাতাশূন্য। বসন্তের শেষে ফুলের কলি ধরার আগে গাছে নতুন পাতা জাগে।  গ্রীষ্মকালে যখন সব গাছে একসঙ্গে সোনালু ফুল ফোটে, তখন মনে হয় হলুদ আলোকচ্ছটায় চারপাশ আলোকিত হয়ে গেছে। গ্রীষ্মে গাছের শাখা-প্রশাখা জুড়ে ঝুলন্ত মঞ্জুরিতে হলুদ রঙের ফুল ফোটে। এর ব্যাপ্তি থাকে পুরো গ্রীষ্মকাল।

এই মৌসুমে সোনালু গাছ সব সবুজ ঝেড়ে ফেলে উৎফুল্ল হলুদ ছড়িয়ে দেয়। পথচারীরা এ ফুলের বৈচিত্র্যে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েই থাকে।

সোনালু ফুলের বাহার থেকেই ‘সোনালু’ নামের নামকরণ। একেক দেশে একেক নামে পরিচিত এই ফুল। এর শুদ্ধ নাম কর্ণিকার। এছাড়া আরববক, কৃতমান, রাজবৃক্ষ, চতুরঙ্গুল, অবঘাতক নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের কোথাও কোথাও বান্দরলাঠি, সোঁদেল, সোমরাল নামেও পরিচিত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নাম দিয়েছিলেন অমলতাস। হিন্দিতেও এর নাম অমলতাস। ইংরেজি ভাষায় একে বলা হয় গোল্ডেন শাওয়ার। সোনালু থাইল্যান্ডের জাতীয় ফুল। সেখানে এটি রাচাফ্রুরুয়েক ও ‘খুন’ নামেও সমাদৃত। তবে বাংলাদেশে সোনালু নামেই বেশি পরিচিত।

সোনালু গাছটি মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এর উচ্চতা প্রায় ১০/১৫ ফুট। চৈত্র মাসে সব পাতা ঝেড়ে ফেলে গাছটি একদম ন্যাড়া হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে বৈশাখ মাসে প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয় জারুল-কৃষ্ণচূড়ার সঙ্গে। তবে হলুদ বর্ণের এই ফুলের নাচ কাঠখোট্টা মানুষকেও মুগ্ধ করে।

যখন ফুল ফোটে তখন ঝাড়বাতির মতো বৃক্ষ থেকে এক-দেড় হাত ঝুলে পড়ে। সরিষা রঙের, সোনা রঙের প্রতিটি ফুলে থাকে ৫টি পাপড়ি ও ১০টি পুংকেশর। ফুলগুলো ১ ইঞ্চির মতো প্রশস্ত। দীর্ঘ মঞ্জুরিদণ্ড এই ফুলকে আরও বেশি মোহনীয় করেছে। সোনালুর গর্ভকেশর সবুজ, কাস্তের মতো বাঁকা। ফুলের আকৃতি অনেকটা আঙুলের ডগার মতো। এ কারণে অনেকে সোনালুকে কর্ণিকার নামে ডাকে।

সোনালুর লাঠির মতো ফল বানরের প্রিয় খাদ্য। আর দুষ্টু ছেলেরা এই ফল নিয়ে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলে। বানরকে উদ্দেশ করে লাঠি ছুড়ে দেয়। এ জন্য সোনালুর আরেক নাম বান্দরলাঠি। এই লাঠি ২-৩ হাত লম্বা হয়। একেবারে সুগোল এই লাঠির ভেতরে অনেক বীজ থাকে। এ বীজ থেকে চারা হয়।

আবার শেকড় থেকেও চারা উৎপাদন করে। গাছটির ধূসর মসৃণ বাকল ও পাতায় ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। ডায়রিয়ায় ও বহুমূত্র থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহৃত হয় গাছের বাকল। পাতার বা ছালের রসে ক্ষত ধুলে ক্ষত দ্রুত আরোগ্য হয়। কুষ্ঠ রোগ থেকে মুক্তি পেতেও এটি ব্যবহৃত হয়। এটি অনেক উপকারী উদ্ভিদ।

ঢাকা বিজনেস/সনত/এন/ 


উপদেষ্টা সম্পাদক: সামছুল আলম
সম্পাদক:  উদয় হাকিম
প্রকাশক: লোকমান হোসেন আকাশ



কার্যালয়: বসতি অ্যাসোসিয়েটস (সি-৩), প্লট- ০৬,
ব্লক- এস ডব্লিউ (এইচ), গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৭১৫১১৯৪৪৪,
ইমেইল: dhakabusines@gmail.com