এটি খুব মজার একটি প্রশ্ন, একইসঙ্গে বুদ্ধিমত্তারও বটে। মানবজীবনে কাঁচের ব্যবহার অতি বিস্তর। বর্তমান যুগে আধুনিকতার ফলে কাঁচের বহুমুখী ব্যবহার বেড়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ভবনের দেয়াল নিমার্ণেও কাঁচের ব্যবহার চলছে। প্রকারভেদের দিক থেকে কাঁচ মূলত ছয় প্রকার। যথা : ১.সিলিকা গ্লাস, ২. সোডা লাইম সিলিকা গ্লাস, ৩. লেড অ্যালকালি সিলিকা গ্লাস, ৪. বোরো সিলিকেট গ্লাস ৫. অ্যালুমিনো সিলিকেট গ্লাস, ৬. স্পেশাল গ্লাস।
তবে কাঁচ প্রধানত দুভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রথমত কাঁচ বলতে গ্লাস- Glass যা Material বোঝায়। এটি একধরনের উপাদান, যা দিয়ে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়, সৌখিন তৈজস তৈরি হয়। যেমন, ফোনের ওপরিভাগ গ্লাসের তৈরি, টেবিলের ওপরের প্রোটেকটেড গ্লাস, জানালার থাই গ্লাস প্রভৃতি। সব গ্লাসের ধরন কিন্তু ভিন্ন। কাজও ভিন্ন। গ্লাসগুলো কোনোটা বেশি মোটা, কোনোটা পাতলা। কাঁচের আরেকটি অর্থ হলো, জল বা মদ্যপানের পাত্র। হাতল ছাড়া যে পাত্র, সেইট গ্লাস। আর হাতলযুক্ত হলে, তাকে গ্লাস বলা হয় না। বলা হয়, মগ। আর হাতল ছাড়া পাত্রটি যে উপাদান দিয়েই তৈরি হোক না কেন, সেটিকে গ্লাসই (Glass) বলা হয়। এটির ইংরেজি আরেক নাম Tumbler (টামলার)।
প্লাস্টিকের তৈরি গ্লাস
কারও মনে কোনো সংশয় থাকলে, তিনি তার সেই দ্বিধা দূর করতে গ্লাস না বলে টামলার বলতে পারেন। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে সঠিকভাবে ও নির্দিষ্ট করে বোঝাতে Tumbler শব্দটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ইংরেজরা সাধারণত গ্লাস বলতে গ্লাসের তৈরি গ্লাস (পানীয় পানের পাত্র)-কে বোঝায়। এটিকে আলাদা করে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না। তবে স্টিলের তৈরি গ্লাসকে বোঝাতে বলতে পারেন 'Steel-Glass'। একান্তই যদি কাঁচের গ্লাসকে আলাদা করে বোঝাতে হয়, সেক্ষেত্রে বলতে পারেন 'Crystal-Glass'। মূলত কাঁচের গ্লাস বলতে বোঝানো হয়, কাঁচের তৈরি গ্লাস বা পানপাত্র। যাকে ইংরেজিতে Glass made tumbler বলে।
ইংরেজি থেকে অনেক শব্দ ঋণ নিয়ে আমাদের বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে। বিভিন্ন কারণে এদেশে-বিদেশিদের আগমনের ফলে কিছু শব্দ এদেশের মানুষের মধ্যে থেকে গেছে। যেমন, Table, College, school প্রভৃতি। যেগুলো বাংলা শব্দের মতোই বাঙালি মননে একাকার হয়ে গেছে। তেমনই ‘গ্লাস’ শব্দটিও যখন বাংলায় রূপ নিয়েছে, তখন Glass-এর বাংলা করা হয়েছে কাঁচ। এই গ্লাসের প্যাঁচটি লেগেছে আমাদের সাবকন্টিনেন্টে এসে। সব চেয়ে মজার তথ্য হলো, ধাতব গ্লাস (গেলাস) আমরাই বেশি ব্যবহার করি, ইংরেজরা নয়।