বিপিএলের ফাইনালটা হলো ফাইনালের মতোই। দুই দল লড়লো, জমলো ব্যাট বলের তুমুল লড়াই। আর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উঠলো বরিশালের ক্যাপ্টেন তামিম ইকবালের হাতে। ফাইনালে তারা জিতলো ৩ উইকেটে। ওদিকে রানার আপ ট্রফি নিয়ে এবারের বিপিএল শেষ করলো চট্টগ্রাম। এ নিয়ে টানা দু’বার বিপিএল শিরোপা জিতলো বরিশাল।
ম্যান অব দ্য ফাইনাল হয়েছেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
১৯৫ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারেই ১৪ রান তোলে বরিশাল। ৫০ আসে ৫.৪ ওভারে। ৬ ওভারে ওঠে ঠিক চট্টগ্রামের সমান ৫৭ রান, কোনো উইকেট না হারিয়ে। সমান সমীকরণে দুই দল। ৭ম ওভারে জ্বলে ওঠেন তামিম। ২৪ বলে তুলে ফেলেন ৫১ রান। ৭ ওভার শেষে রান দাঁড়ায় ৭০।
তবে চট্টগ্রাম উদ্বোধনী জুটিতে ১২১ রান করলেও বরিশালের প্রথম উইকেট পড়ে ৮.১ ওভারে, ৭৬ রানে। তামিম আউট হন ২৯ বলে ৫৪ রান করে। ওই নবম ওভারের চতুর্থ বলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় চট্টগ্রাম। ডেভিড মালান ২ বলে ১ রান নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
১০ ওভারে বরিশালের রান ওঠে ২ উইকেটে ৯৫। চট্টগ্রামের ছিল বিনা উইকেটে ৯৩। ১০.২ ওভারে তৃতীয় উইকেট পড়ে বরিশালের, নাইম ইসলামের বলে ক্যাচ নেন আরাফাত সানি; তৌহিদ হৃদয় ফেরেন ২৮ বলে ৩২ করে। ১১ ওভারে চট্টগ্রামের ছিল ১০০ রান, বরিশাল করে ১০৩। বলা চলে সমানে সমানে লড়তে থাকে দুই দল। ফাইনালকে তারা রাঙ্গাতে থাকে ফাইনালের রঙে।
১৩তম ওভারের চার নম্বর বলে আবারও উইকেট তুলে নেন নাইম ইসলাম। এবার নাফের হাতে ক্যাচ বানান মুশফিকুর রহিমকে। দলীয় ১৩০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বরিশাল। ৯ বলে ১৬ করে ফেরেন মুশফিক। ১৫ ওভারে ওঠে ১৫১ রান, যেসময় চট্ট্রগামের রান ছিল ১৪১। তবে ১৬ ওভার শেষে আবারও দুই দল সমান ১৬৩ রানে। ১৭২ রানে পড়ে পঞ্চম উইকেট। ২৮ বলে ৪৬ রান করে আউট হন কাইল মায়ার্স। উইকেট পান শরিফুল। ১৫ বলে বরিশালের দরকার মাত্র ২৩ রান। ১ রান পড়েই ফেরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
১৯তম ওভারের শেষ বলে নবি আউট হয়ে যান। শেষ ওভারে বরিশালের দরকার ছিল ৮ রান। প্রথম বলেই ছক্কা হাকান রিশাদ। সিঙ্গেল এবং ওয়াইড থেকে আসে আরো দুই রান। ৩ বল হাতে রেখেই জিতে যায় বরিশাল।
ফাইনাল সন্ধ্যায় টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল বরিশাল। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে টসে হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রাম সংগ্রহ করেছিল ১৯৪ রান।
কিন্তু বোলিংয়ে বরিশাল শুরুর দিকে সুবিধে করতে পাারেনি। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পারভেজ ইমন এবং পাকিস্তানী নাফে উইকেট ধরে রেখে সচল রাখেন রানের চাকা। প্রথম ৬ ওভারে আসে ৫৭ রান। ১০০ রান আসে ১১ ওভারে। ৩০ বলে ৫০ করেন ইমন। অন্যদিকে ৩৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন নাফে। উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে ১২১ রানে। ইবাদতের বলে মুশফিকের কাছে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাফে, তার সংগ্রহ ৪৪ বলে ৬৬ রান।
এরপর পারভেজ ইমন চালিয়ে খেলতে থাকেন। অন্যপ্রান্তে ইনজুরি আক্রান্ত ক্লার্ক ছিলেন তুলনামূলক ধীর গতির। তবে শেষের দিকে তিনিও মনোযোগী হন রানের গতি বাড়াতে। ১৯১ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। ২৩ বলে ৪৪ করে রান আউট হন ক্লার্ক। ১৯.২ ওভারে সিঙ্গেলকে ডাবল বানাতে গিয়ে ফিরতে হয় তাকে।
উইকেটে আসেন শামীম পাটোয়ারি। কিন্তু দুই বলের বেশি টিকতে পারেননি তিনি। ২ বলে ২ রান করে আউট হন। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে ব্যাট হাতে নামতে হয় হুসেইন তালাতকে। দুই বলে তিনি নিতে পারেননি কোনো রান। শেষ বলে ১ রান আসে বাই থেকে। ১৯৪ রানে থামতে হয় চট্টগ্রামকে।
শুরুতে চট্টগ্রাম প্রভাব বিস্তার করলেও শেষের দিকে ভালো করেন বরিশালের বোলাররা। যে কারণে ২০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছতে পারেনি চট্টগ্রাম।
বরিশালের পক্ষে ইবাদত এবং মোহাম্মদ আলী একটি করে উইকেট পান। ক্লার্ক হন রান আউট।
স্কোর :
চট্টগ্রাম – ১৯৪/৩
বরিশাল- ১৯৫/৭ (১৯.৩ ওভার)
ফল: বরিশাল ৩ উইকেটে জয়ী।