বাড়তি ওজন কমাতে ব্যায়াম থেকে শুরু করে ডায়েট কতকিছুই তো করা হয়। এত পরিশ্রমের পরও দেখা যায় ওজন কমছে না। মাসের পর মাস নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া, ব্যায়াম করার পরও ওজন না কমা হতাশাজনক। এ অবস্থায় অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। পুষ্টিবিদদের মতে কিছু ভুলের জন্যই মূলত এমনটা হয়। মার্কিন স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের প্রতিবেদনে পুষ্টিবিদরা ডায়েটের কিছু ভুল নিয়ে কথা বলেছেন, যা ওজন কমাতে বাধা দেয়। জেনে নিন এই ভুলগুলো আপনি করছেন কিনা-
তরল ডায়েট: ডায়েটে কেবল তরল খাবার খেয়ে ওজনকে বশে আনতে চান অনেকেই। এই সময় তরল হিসেবে জুস, স্মুদি ইত্যাদি খাওয়া হয়, আর এসবে চিনি বেশি থাকে। পুষ্টিবিদেরা গোটা ফল খাওয়াকেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে অধিক কার্যকর বলে মনে করেন। কারণ, এতে আঁশ থাকে। জটিল শর্করা রাখা যায় না তরল ডায়েটে। এটিও ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
গ্লুটেন বাদ দেয়া: গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট অনুসরণ করতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, মিনারেল আর আঁশ বাদ দেয়া হয় খাদ্যতালিকা থেকে। আর হোলগ্রেইন বা একটা শস্য পুরোটা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। বাজারে গিয়ে লেবেল দেখে প্রক্রিয়াজাত করা গ্লুটেন-ফ্রি খাবারে লাভের চেয়ে ক্ষতি আরও বেশি। বরং লাল আটার রুটি বা চাপটি খেলে তাতে গ্লুটেন থাকলেও পেট ভরাতে এবং ওজন কমাতে এই খাবার ভালো।
ভুল খাদ্যতালিকা: আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান দরকার হয়। তবে ডায়েট করতে গিয়ে শর্করা বা ফ্যাট খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেয়ার যে প্রচলন, তাকে একেবারেই স্বাস্থ্যকর মনে করেন না বিশেষজ্ঞরা। এতে ওজন স্বাভাবিকভাবে কমবে না। আবার প্রাথমিক পর্যায়ে ওজন কমলেও তার দীর্ঘমেয়াদি ফল ভালো হবে না। এর চেয়ে ওমেগা থ্রি যুক্ত উপকারী ফ্যাট আর হোলগ্রেইন জটিল শর্করা রাখতে হবে খাবারের তালিকায়। খাদ্য তালিকা থেকে মাংসও বাদ দেয়া যাবে না। তবে বেশি বেশি উদ্ভিজ্জ খাবার খেতে হবে।
লং ফাস্টিং: বিভিন্ন ধরনের ডায়েট আছে। কিছু ডায়েটে ফাস্টিং বা দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকতে হয়। না বুঝে এইসব ডায়েট শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। না খেয়ে থাকলেই যে ওজন কমে, এটি ভুল ধারণা। এতে উল্টো শরীরের বিপাকীয় কাজ ধীরগতির হয়ে যায়। আবার ওজন কমানোও কঠিন হয়ে যায়।
এর চেয়ে বরং দিনে ৬ বার অল্প অল্প করে স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিমিত ক্যালরির খাবার খেলে ভালো। অন্যদিকে অনেক লম্বা সময় না খেয়ে থাকলে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। বারবার এ রকম হলে শরীর বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাট জমিয়ে রাখে। এমনকি ফ্যাটি লিভারও হতে পারে এই অভ্যাসের কারণে।