দিনাজপুরের জেলার ১৩ উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা-মাড়াইয়ের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। কৃষকেরা বলছেন, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের দিয়ে কম সময় ধান কাটা-মাড়াই করা যায়। এছাড়া, ধান নষ্ট হয় না। খরচও তুলনামুলক কম। তাই তারা কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন। আর কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মালিকেরা বলছেন, এই মেশিন যখন প্রথম বের হয়, তখন সংখ্যায় কম ছিল। কৃষকেরা ব্যবহারও কম করতেন। এখন জেলায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের সংখ্যা বেড়েছে। আবার কৃষকেরাও কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন।
বুধবার ( ১৫ মে) কথা হয়, জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষক সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা আর মেশিন দিয়ে ধান কাটার খরচ প্রায় সমান। কিন্তু মেশিন দিয়ে ধান কাটলে সময় কম লাগে। আর আলাদা করে মাড়াই করতে হয় না।’
সাদেকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘প্রতিবছর ইরি-বোরো ধান কাটার সময় ঝড়-বৃষ্টির কারণে খুব টেনশনে থাকতে হয়। যদিও এবার ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াই করার জন্য আবহাওয়া ভালো আছে। কিন্তু আকাশের ব্যাপার তো বলা যায় না। তাই মেশিন দিয়েই দ্রুত ধান কেটে নিচ্ছি।’
রোববার (১৯ মে) হিলির কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রতিবছর ইরি-বোরো ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। তাই ধান কাটা-মাড়াইয়ের মেশিন বের হয়ে অনেক সুবিধা হয়েছে। খরচ যাই হোক অল্প সময়ে ধান কাটা ও মাড়াই একসঙ্গে হচ্ছে। হিলিতে দুরের জমি প্রতিবিঘা (৩৩ শকক) ধান মেশিন দিয়ে কাটতে ২ হাজার ৭০০ টাকা আর কাছের জমির ধান কাটতে ২ হাজার ২০০ টাকা নিচ্ছেন মেশিনের মালিকেরা।’
কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মালিক মো. জামিলুর রহমান বলেন, ‘প্রথমদিকে জেলায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের সংখ্যা অনেক কম ছিল। কৃষকেরা কম ব্যবহার করতেন। কারণ মেশিন দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই করলে খড় পাওয়া যায় না। কিন্তু বর্তমানে কৃষকেরা খড়ের আশা বাদ দিয়ে কিভাবে দ্রুত ধান ঘরে তোলা যায়, সেটা ভেবে মেশিন দিয়ে ধান-কাটা মাড়াইয়ের দিকে ঝুঁকছেন।’
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘এবার জেলার ১৩ উপজেলায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করে আসছে। আশা করছি, কৃষকেরা কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।’