২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার



আমনের বাম্পার ফলনেও কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ কেন

মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ২৯ নভেম্বর, ২০২৩, ০৮:৪১ এএম
আমনের বাম্পার ফলনেও কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ কেন


ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকেরা। তবে, তারা এ-ও বলছেন, সারসহ আনুষঙ্গিক কৃষিপণ্যের দাম কমলে ধান-চালের ন্যায্যমূল্য পাবে কৃষক। এতে অনাবাদি জমিগুলোও চাষের আওতায় চলে আসবে। এদিকে কৃষি এবং খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকেরা যেন ধান-চালের ন্যায্যমূল্য পান, সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।  

প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ব্রি-৭৫, ব্রি-৯০ বীণা-৭, বীণা-১৭, বিআর-২২ ও হাইব্রিড জাতীয় ধানের চাষ করা হয়েছে। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকায় সোনালি ধানের আভায় ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। চাষিরা জানান, জমিতে সার, কীটনাশক, নিড়ানি, মই দেওয়াসহ সর্বশেষ ফসল কাটতে গিয়ে তাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। এর মধ্যে সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ নেমে এসেছে । ফলে তারা সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাছাইট গ্রামের কৃষক মো. মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এবার জমিতে ধান অনেক ভালো হয়েছে। কিন্তু সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, সে দামের কাছে আমরা যে দামে সার কীটনাশক দিয়েছি, তার মিল নেই। চাল বিক্রির দাম অনেক কম হয়ে গেছে। এতে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারবো না।’

মো. কাইয়ুম নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ার কারণে আমরা কোনো রকম বেঁচে আছি। সরকার যদি সার ও কীটনাশকের দাম একটু কমিয়ে দেয়, তাহলে যে অনাবাদি জমিগুলো আছে, সেগুলোতে ধান চাষ করবো। চালের যে দাম দিয়েছে, তাতে আমরা লাভবান হতে পারবে না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ‘চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ৫১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ২ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এবার আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কৃষকদের আয় বাড়ানো। উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভজনক ফসল করার জন্য আমরা কাজ করছি।’

সুশান্ত সাহা আরও বলেন, ‘এ বছর রোপা আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬৫ কোটি টাকা।’

জেলা খাদ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকতা কাউছার সজীব বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে সরকার জেলায় ৭টি উপজেলায় কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করবো। এই অ্যাপে আবেদন করতে পারবেন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর অনলাইনে লটারির পর কৃষকদের কাছে থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৯৯৪ মেট্রিক টন ধান এবং ৪৪ টাকা কেজি দরে ১৯ হাজার ১২৩ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হবে। এতে কৃষকেরা অনেকটাই লাভবান হবেন।’

/ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন