সুনামগঞ্জ জেলার হাওরগুলোতে ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে নতুন পানি। হাওর, বিল ও জলাশয়ে থাকা দেশি মাছ নতুন পানিতে বের হয়ে আসছে। ফলে এসব ধরতে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাহিরপুর উপজেলার বৃহত্তর টাঙ্গুয়া, শনি, মাটিয়ান ও মহালিয়া হাওরে মাছ ধরতে বের হয়েছেন জেলেরা। কেউ ডিঙি নৌকা নিয়ে, কেউ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে মাছ ধরছেন।
শনিবার (১৭ জুন) তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পাশে একটু পর পর ছিপ জাল পুঁতে রেখেছেন অনেকে। হাঁটু সমান পানিতে নেমে ঠেলা জালেও মাছ ধরছেন কেউ কেউ। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ট্যাংরা, চান্দা, তারা চিকরা, পুঁটি, চিংড়ি মাছ।
তাহিরপুর সদরের ইউনিয়নের বাসিন্দা হাছান মিয়া বলেন, ‘রাতে বজ্রপাতে মাছ সড়কের কাছে চলে আসে। তখন হাত দিয়েই মাছ ধরা যায়। আমি সড়কে এক কুড়ির মতো কই মাছ ধরেছি।’
শনির হাওরে মাছ ধরেন শফিক মিয়া। তিনি বলেন, ‘নিজে খাওয়ার জন্য মাছ ধরি। আজ প্রথম এসেছি মাছ ধরতে। এর আগে হাওরে পানি ছিল না। তাই মাছ ধরতে পারিনি। নতুন পানি এসেছে বলে তুলনামূলক মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে।’
মাছ বিক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, ‘নতুন পানি আসায় নতুন মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দেশি ও চাষের সব জাতের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। পানি হওয়ায় দেশি মাছ আগের থেকে কিছুটা বেশি পাওয়ায় দাম কিছু কমেছে।’
আজিজুল মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির সময় বেশি মাছ ধরা পড়ে। বজ্রপাতের সময় মাছ সড়কের কাছে এসে পড়ে। তখন জাল ফেললেই আর মিস নেই। ভালো করে কয়েকটা খেপ দিতে পারলেই অয়।’
হাওরে মাছ ধরতে এসে বৃষ্টি-বজ্রপাতের মধ্যে মাছ ধরতে ভয় পান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজুল মিয়া বলেন, ‘মরণের ভয় করলে কি আর মাছ মারণ যাইবো? মাছ মারার শখ থাকলে মরণের চিন্তা করলে অইত না।’
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামশুল করিম বলেন, ‘মাছ ধরার সময় জেলেদের খেয়াল রাখতে হবে যেন ডিমওয়ালা মা মাছ এবং ছোট ছোট পোনা ধরা না পড়ে। ক্রেতারাও যেন মা মাছ ও পোনা মাছ না কেনেন। মাছের বংশবৃদ্ধিতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মৎস্য আইনের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে অভিযান চালিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবো।’
ঢাকা বিজনেস/এনই