২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবার



সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের ঝাউবন

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ০১ আগস্ট, ২০২৪, ০৪:৩৮ এএম
সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের ঝাউবন


জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র তীরের ঝাউবন। ভারী বৃষ্টি, লঘুচাপ ও ভরা পূর্ণিমার জোয়ার অব্যাহত থাকায় সমুদ্র তীরের ভাঙন বেড়েছে। সেই সঙ্গে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শতশত ঝাউগাছ। 

বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে লাবনী বিচ পয়েন্ট থেকে নাজিরারটেক সমুদ্র মোহনা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, সাগরের ঢেউ জিওব্যাগ ডিঙিয়ে সরাসরি সমুদ্র তীরের ঝাউগাছে আঘাত হানছে। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাগুলো। 

স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টিপাত, পূর্ণিমার জোয়ার ও লঘুচাপের কারণে সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়েছে। কূলে আঁচড়ে পড়া ঢেউ সজোরে আঘাত হানছে জিও ব্যাগে। এসব জিওব্যাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সমুদ্রের পানি সরাসরি ঝাউগাছে গিয়ে পড়ছে। ফলে মাটি নরম হয়ে নুইয়ে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে ঝাউগাছগুলো।  এই কারণে হুমকির মুখে পড়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও বালিয়াড়িতে লাগোয়া ছোট-বড় স্থাপনাগুলো। দ্রুত এই এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না গেলে ঝাউবন ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। 

কবি নিলয় রফিক বলেন, ‘কিছুদিন ধরে টানা বৃষ্টি। তার ওপর সাগরে সতর্কতা সংকেত। তাই সমুদ্রে জোয়ারের পানি উচ্চতা বেড়েছে। যার কারণে সাগরের পাড় ভেঙে ঝাউ গাছগুলো পড়ে যাচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সীমানা প্রাচীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে দেখেছি অসংখ্য ঝাউগাছ পড়ে আছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে এবারের মতো বেশি ক্ষতি আগে দেখা যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড তীরের ভাঙন ঠেকাতে সমুদ্রের বালিয়াড়িতে জিওব্যাগ দিয়েও ঝাউগাছ রক্ষা করতে পারছে না।’ 

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। যে কারণে জোয়ারের পানির ধাক্কায় নাজিরারটেক, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর, শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্টসহ বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রায় ২০০ বড় এবং ১ হাজার ৪০০ ছোট ঝাউ চারা উপড়ে গেছে। গাইড ওয়াল ও টেকসই নবায়ন করলে ভাঙন রোধ হতে পারে।’

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিথুন ওয়াদ্দাদার বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে সমুদ্র সৈকতে ৬০০ মিটার ভাঙন নোটিশ করেছি৷ সমুদ্র তীর ভাঙন প্রতিরোধে নাজিরারটেক থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিগগিরই অত্যাধুনিক ফ্লাড ওয়াল ও ব্লক নির্মাণ করা হবে। এ কাজ সম্পন্ন হলে রক্ষা পাবে ঝাউবন।’ 

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২-৭৩ সালে সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে ৫৮৫ হেক্টর জমিতে লাগানো হয় ১৪ লাখের বেশি ঝাউগাছ। ইতোমধ্যে সাগরের ঢেউয়ে বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য ঝাউগাছ। 



আরো পড়ুন