সুনামগঞ্জে গেলো কয়েকদিনের টানাবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যাপরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি কমছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যার ক্ষত কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বানভাসিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বানের পানিতে ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির স্রোত এতটা ছিল যে, কেউ কেউ ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ফেলে কোনো রকম প্রাণ নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটেছেন, আবার অনেকেই ভিটেমাটির মায়ায় পানিবন্দি অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরের ভেতর বন্দিদশায় দিনযাপন করেছেন। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে সেই ভাঙা ঘরে জোড়াতালি দিয়ে বসবাসের উপযোগী করছেন তারা।
তাহিরপুর উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি অন্যান্য গ্রামের তুলনায় অনেক নিচু, বন্যায় বলা যায় কয়েকটি ঘর ছাড়া গ্রামের প্রায় সব ঘরে পানি উঠেছে। সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এইমুহূর্তে টেউটিন অথবা টাকা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি তাদের।’
তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরপর দুই বারের বন্যায় আমার ঘরটা ঢলের পানিতে ভেঙে গেছে। আপাতত ভাঙা ঘরকে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকম ঠিক করে থাকতেছি।’
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল হাই বলেন, ‘দুই দফার বন্যায় সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এখন সবাই জোড়াতালি দিয়ে ঘরগুলো কোনোরকম ঠিক করছি।’
ছাতক উপজেলার বাসিন্দা শাহিনুর বলেন, ‘দুই দফা বন্যায় আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। ঢলের পানিতে ঘরবাড়ির সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ঘর মেরামত করার জন্য সরকারি সহায়তা কবে, পাবো তা সঠিক জানি না। দ্রুত সহায়তা পেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তবে বানভাসি মানুষ যাতে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য তাদের সহায়তা করা হবে।’