১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার



পোকার আক্রমণে দিশেহারা মেহেরপুরের পাটচাষিরা

মুঈন তাজ ওয়াল, মেহেরপুর || ২৭ জুলাই, ২০২৩, ০২:০৭ পিএম
পোকার আক্রমণে দিশেহারা মেহেরপুরের পাটচাষিরা


মেহেরপুরে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পাট চাষিরা। গত কয়েক বছরের তুলনায় জেলায় এবার পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। তবে, ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। 

অন্য বছরের তুলনায় চলতি বছর তাপদাহ ছিল বেশি, তারপর নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে পোকার আক্রমণ। তিরিং পোকা, আচা পোকার আক্রমণে উদ্বিগ্ন জেলার পাট চাষিরা। ফলন আশানুরূপ হবে না বলে দুশ্চিন্তায় তারা। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের পাট চাষি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমার দেড় বিঘা জমিতে পাট আছে। পোকার আক্রমণে ভয়ে আছি।’ 

কৃষকরা বলেন, জমিতে বপনের পর থেকে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে পাট ঠিকমতো বড় হয়নি। সেইসঙ্গে এখন যোগ হয়েছে পোকার আক্রমণ। অন্য বছরে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ হারে ফলন হয়ে থাকে। এ বছর ৬-৮ মণের বেশি ফলন হবে না। আমরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছি, তারপরও পোকার আক্রমণ কমছে না। 

ফতেপুর গ্রামের পাট চাষি জামাল হোসেন বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর পাটে খরচ বেশি, তারপর আবার নিয়মিতভাবে পোকা মারার বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে জমিতে, এতে আমাদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। পাটে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো বিঘা প্রতি খরচ হয়ে থাকে। এ বছরে এই টাকা উঠবে না আমাদের। তারপরও আমরা আবাদ করি। আবাদ না করেও কিছু করার নাই আমাদের। পাটে লাভের কিছুই থাকবে না, শুধু জ্বালানি হিসেবে পাটখড়িটাই ব্যবহার করতে পারি আমরা।’ 

সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ভূমিহীন কৃষক হাসিবুল ইসলাম জমির পাট কেটে ফেলছে। তিনি বলেন, ‘পাটের আঁশ এখনো পূর্ণতা পায়নি। পরিপক্কতা আসার আগে আমাদের কেটে ফেলতে হচ্ছে। কারণ, পাট এমনিতেই বড় হয়নি, তারপরে পোকার আক্রমণে পাট বড় হবে না, বরং বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে, তাই আগে ভাগে জমির পাট কেটে ফেলছি।’ 

কৃষক খেদের আলী বলেন, ‘পাটকে আমরা সোনালি আঁশ বলে থাকি, সেই সোনালি আঁশ এবার অতিরিক্ত রোদের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমাদের মাঠে না, এমন মাঠকে মাঠ জমির পাট বড় হয়নি, এতে ফলন হবে কি করে। আমাদের আসল টাকাই উঠবে না। জমির খাজনা দেবো কিভাবে, আর খাবোই বা কী? এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি আমরা।’

এবিষয়ে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘এই মুহূর্তে পাটের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা নেই। তবে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছর পাটের ভালো ফলন হবে এবং চাষিরা লাভবান হবেন।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন